Sunday, April 28, 2024
No menu items!
spot_img
Homeবাংলাদেশকুইক রেন্টালের আড়ালে পুকুরচুরি বন্ধ না করে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো জনগনের সাথে...

কুইক রেন্টালের আড়ালে পুকুরচুরি বন্ধ না করে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো জনগনের সাথে প্রতারনার শামিল – এবি পার্টি

রমজানের আগে দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবি পার্টির মিডিয়া ব্রিফিং:

প্রেস নোটঃ রমজানের দুই সপ্তাহ আগে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি। বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের পাশাপাশি নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়াও বন্ধের দাবি জানিয়েছে এবি পার্টি। এবি পার্টি মনে করে, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির দায় জনগণের কাঁধে চাপানো হচ্ছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। শনিবার বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে আয়োজিত এক ব্রিফিং এ নেতৃবৃন্দ বলেন, ভুলনীতি ও কমিশনভোগীদের সুযোগ দেওয়ায় বিদ্যুৎ খাতে বড় আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে যা সরকারের নিজস্ব মূল্যায়ন প্রতিবেদনেও এসেছে। দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা রোধ করে বিদ্যুৎ খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব, অথচ এটি না করে জনগণের কাঁধে এই বোঝা চাপানো হচ্ছে গত দুউ যুগ থেকে। ব্রিফিং এ মূল বক্তব্য তুলে ধরেন এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। মন্তব্য যোগ করে সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ব্রিফিং শেষ করেন দলের যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার।

ব্রিফিং এ বলা হয়, বর্তমান চড়া মূল্যস্ফীতির সময়ে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্তের মাসের খরচ, উৎপাদন খরচসহ সব খাতে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ার প্রভাব পড়বে। সাধারণ মানুষকে কম খেয়ে বেঁচে থাকতে হবে। গত বছর বাংলাদেশের সরকারি একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ খাতে অপচুক্তি, ভুল নীতি এবং দুর্নীতির কারণে হাজার হাজার কোটি টাকা ‘ডলারে’ গচ্ছা চলে গেছে যার পরিমান নূন্যতম ১৪ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা বা ৯ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে বসিয়ে বসিয়ে ভাড়া দেয়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়াকে ‘লুটেরা মডেল’ বলেও বর্ণনা করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দপ্তরের কারিগরি জ্ঞানহীন, অভিজ্ঞতাহীন একদল দুর্নীতিপরায়ণ ব্যবস্থাপকদের কারণে বাংলাদেশের বিদ্যুৎখাত অযোগ্য (মূলত ভারতীয় ও চীনা) সরবরাহকারীদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।’ পরবর্তীতে প্রতিবেদন তৈরী করা সেই দুই কর্মকর্তাকে সরকার সাময়িক বরখাস্ত করে।

সিপিডি ও টিআইবি সহ দেশের জ্বালানী বিশেষজ্ঞরা বারবার বলেছে যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা ও প্রক্রিয়াগত দুর্বলতার কারণে ভর্তুকি বাড়ছে আর সেই বাড়তি ভর্তুকির দায় নিতে হচ্ছে জনগণকে। বাংলাদেশের সরকার ২০১০ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি’ নামে একটি আইন করে, যা জ্বালানি খাতের ‘দায়মুক্তি আইন’ বলে পরিচিত। এই আইনের ফলে বিদ্যুৎখাতে লোকসান আরও বাড়ছে, কিন্তু বাতিল করবার বদলে অনির্বাচিত সংসদ এটার মেয়াদ আরো বাড়িয়েছে।

রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের মাধ্যমে সরকার দেশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এরই মধ্যে উন্মোচিত হয়েছে আরও এক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী আদানি-বিপিডিবি চুক্তি। সরকার ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর ভারতের আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেডের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ (কয়লাভিত্তিক) ক্রয়ের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির আওতায় আদানি পাওয়ারকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে দিতে হবে বছরে ১,১৭,০৫৮ কোটি টাকা। দেশে চরম ডলার সংকট থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ১.১২ বিলিয়ন ডলার দিতে যাচ্ছে আদানিকে ২০২৩-২৪ সালের বিপরীতে। এটা দেশের কয়লাচালিত অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি।

ব্রিফিং এ বলা হয়, ক্রয়মূল্যের আরেক উপাদান-জ্বালানির জন্য দেশের অন্যান্য কয়লাভিত্তিক জ্বালানি মূল্যের তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি মূল্য দিতে হবে আদানি পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করতে। সব খরচসহ আদানি পাওয়ারে ব্যবহৃত প্রতি টন কয়লার মূল্য ধরা হয়েছে ২০০ ডলারের মতো। অথচ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড আদানি পাওয়ারকে টনপ্রতি মূল্য দিতে হবে ৪০০ ডলার অর্থাৎ দ্বিগুণ। ২০২৪ এ ক্ষমতায় আসবার জন্য আদানী যেন মোদী সরকারকে লবী করে সেজন্যই দেশের স্বার্থ বিক্রি করে অন্যায্য চুক্তি করেছে অবৈধ/অনির্বাচিত এই সরকার। আদানি পাওয়ার চুক্তির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কয়লার এই চড়া দাম আদায় করতে চায়। আর এসব মূল্যই দিতে হবে মার্কিন ডলারে, যা বর্তমান নিম্নমুখী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে আরও তলানিতে নিয়ে ঠেকাবে বলে মনে করে এবি পার্টি।

ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির যুগ্ম-সদস্য সচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, যুব পার্টির আহবায়ক এবিএম খালিদ হাসান, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব আব্দুল বাসেত মারজান, সহকারী সদস্য সচিব শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, সহকারী সদস্য সচিব অধ্যাপক আবু হেলাল, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খাঁন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বারকাজ নাসির আহমাদ, তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, নারী নেত্রী সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, অপি আক্তার, রুনা হোসাইন, আমেনা বেগম, আব্দুল হালিম নান্নু, আনোয়ার হোসেন, নজরুল ইসলাম বাবু, এডভোকেট সরন চৌধুরী, রিপন মাহমুদ (দারোয়ান), মশিউর রহমান মিলু, এনামুল হক, আব্দুল কাদের মুন্সী,যুব পার্টির নেতা মাসুদুর রহমান, ছাত্রপক্ষের আহবায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স আলামিন, ছাত্র নেতা হাসিবুর রহমান খাঁন

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments