Saturday, April 26, 2025
No menu items!
spot_img
Homeআন্তর্জাতিকরাজনীতির’ এর ফাদে বিএনপি, সাথে জামায়াতকেও সঙ্গী করলো

র’ এর ফাদে বিএনপি, সাথে জামায়াতকেও সঙ্গী করলো

রাজা গোলাম রাব্বানীঃ জামায়াত ইসলামীর শীর্ষ দুই নেতা ডাঃ সফিকুর রহমান ও ডাঃ আব্দুল্লাহ তাহের এবং বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সাম্প্রতিক লন্ডনের রুদ্ধদার বৈঠক নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা কর্মীদের মধ্য প্রচন্ড উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সকলেই বগল দাবিয়ে প্রচারসকরছে ডিসেম্বরের মধ্যই নির্বাচন। ডঃ ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে সুক্ষ্ম ভাবে অবস্থান নেয়ার চেস্টাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

যদিও আমি কোন রাজনীতিবিদ নই তবুও রাজনীতি বিদ্যার ছাত্র হিসেবে আমি আমার মতামতটি আমার ওয়ালে রাখতে চাই। জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে কনফিউশন শুধু আমার নয়, আমার মত যারা মুসলিম জাতীয়তাবাদ, ইসলামী মূল্যবোধ ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের সমন্বয়ে একটি কল্যান রাস্ট্রের স্বপ্ন দেখে তাদের সবারই।

আমরা সবাই জানি ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাস্ট্রের জন্মের পর থেকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র” এই ভূখন্ডের রাজনীতি নিয়ন্ত্রনের চেস্টা করে যাচ্ছে, যা তারা সফল ভাবে এরশাদ ও হাসিনার মত গাদ্দার জন্ম দিয়েছে। “র” এই ভূখন্ডে স্বৈরাচার লেন্দুপ দর্জি রুপী হাসিনার সময়ে একদম পাকাপোক্ত ভাবে তাদের অবস্থান গড়ে তুলেছে। এমতাবস্থায়, ২০২৪ সালের ছাত্র গন বিপ্লবের মাধ্যমে হাসিনার করুণ বিদায় এবং তৎপরবর্তী বিএনপি – জামায়াতের রাজনীতি ছাত্র-জনতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করছে এবং যার ফলশ্রুতিতে এই দুই দলের নীতিনির্ধারকরা বুঝে গেছে যে, জনগন এখন একটি নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায় যা তারা “বাংলাদেশ-২” নামে উল্লেখ করেছে যা বিএনপি – জামায়াতের রাজনীতি অস্তিত্বের সংকটে ফেলবে সেটা নিশ্চিত। ২৪’এর গণবিপ্লবের পরে যদিও বিএনপি-জামায়াতের মধ্য কিছু বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য দেখা গেলেও সম্প্রতি এই দুই দল ক্ষমতার প্রশ্নে “র” এর পরিচালনায় একটি ঐক্যমতে পৌছেছে। এখন প্রশ্ন হলো “র” এর পরিচালনায় বড় দুই দলের ঐক্য জনগণ কিভাবে গ্রহন করছে। গত ১৭ বছর ভারতীয় আগ্রাসনের যাতাকলে পিস্ট জনগণ ভারতীয় এই নীল নকশা বাস্তবায়ন কোন ভাবেই মেনে নিবে না এটা নিশ্চিত। বিশেষ করে গত ২ বছরের ভারতীয় পন্য বর্জন এবং জুলাই -২৪ গণ বিপ্লব তার প্রকৃস্ট উদাহারন।

এখন আসি এই দুই দলের কিছু অতীত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সম্পর্কে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃস্টির পর থেকে আজ পর্যন্ত জামায়াতের সকল গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই ছিল ভুলের পরসায় সাজানো, ১৯৭১, ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচারের সাথে আওয়ামী-জামায়াতের আঁতাত, ১৯৯৬ সালে আবারো আওয়ামীলীগের সাথে আঁতাত, ২০০১ সালে নেতা-কর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে বিএনপির সাথে ক্ষমতার ভাগাভাগী করা সহ তাদের প্যাণ্ডুলাম রাজনীতির ফলে তাদের দলের শীর্ষ নেতাসহ গুরুত্বপূর্ন নেতাদের জীবন দিতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, হাসিনা ও ভারত গত ১৭ বছরে তাদের একপ্রকার ধ্বংশের দ্বার প্রান্তে পৌছে দিয়েছিল। আমি মনে করি জামায়াতের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বাংলাদেশের জন্য একটি দুষ্ট গ্রহের শামিল। না আমি মোটেও কোন কঠিন কথা বলি নাই। জামায়াত বার বার প্রমান করেছে, দেশের ক্রান্তিকালে জামায়াত কোন দিনও দূরদৃষ্টি দিয়ে, জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আমার মনে হয় বর্তমানে “র” এর পরিচালনায় বিএনপি – জামায়াতের অঘোষিত ঐক্য আবারো সেই পুরানো ভুলের অবতারনা করবে।

এবার আসি স্বৈরাচার, ক্ষমতালোভী, স্বাধীনতার সাথে গাদ্দারী করা মুজিবের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ও স্বপরিবারে নির্মম মৃত্যুর পর বিভিন্ন ঘটনা উপঘটনার মধ্য দিয়ে জেনারেল জিয়া, বহুদলীয় গণতন্ত্রএবং বিএনপির আবির্ভাব একটি যুগান্তকারী ঘটনা হলেও আবারো হাসিনা- “র” এর ষড়যন্ত্রে প্রেসিডেন্ট জিয়া শহীদ হন এবং সাথে সাথে বাংলাদেশ আবারো বেহায়া দালাল স্বৈর শাসকের খপ্পরে পড়ে। বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত দক্ষতার সাথে নেতৃত্ব দিয়ে ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসে কিন্ত বিএনপি “র” এর খপ্পর থেকে মুক্ত হতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে তত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কিত ভুলের জের ধরে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে। এই আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পিছনে জামায়াতেরও ভুমিকা স্পস্টতঃ দৃশ্যমান। ২০০১ সালেও আবার জামায়াতকে নিয়ে জ্ক্ষমতায়। ২০০৬ সালে আবারো ৯৬ সালের ভুলে ও “র” এর সুক্ষ্ম পরিচালনায় ১/১১ সরকারের জন্ম, আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় আসন এবং ফলশ্রুতিতে ১৭ বছরের স্বৈরীচারী শাসন। তাই আমি মনে করি এবং স্পস্টতঃ বলতে চাই খুনী হাসিনার ১৭ বছরের ক্ষমতায় থাকার জন্য বিএনপি – জামায়াত দুই দলই দ্বায়ী।

এখন প্রশ্ন হলো, জুলাই-২৪ এর গণবিপ্লবের মাধ্যমে জাতীর বুকে চেপে থাকা ১৭ বছরের স্বৈরাচারের পতনের পর আবারো “র” এর গভীর ষড়যন্ত্রে এই দুই দলের ঐক্যে জনগনের প্রত্যাশিত একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নতুন বাংলাদেশ-২ কি তাহলে মুখ থুবড়ে পড়বে? নাকি জনগণ তৃতীয় কোন রাজনৈতিক দল খুজে নিবে? নাকি ডঃ ইউনুসের ক্ষমতা প্রলম্বিত করার জন্য ছাত্র-জনতা আবারো মাঠে নামবে? উত্তর আপনাদের কাছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments